গল্প গলায় দড়ি আফছানা খানম অথৈ

0

গলায় দড়ি

আফছানা খানম অথৈ

বিশ বছরের টগবগে যুবতি মেয়ে জিনাত রেহানা,গায়ের রং শ্যামলা,বড়ি ফিটনেস ভালো সুস্বাস্থের অধিকারী।পাঁচ ভাইয়ের এক বোন।গরীব হলেও খুব আদর আহলাদে সে বড় হয়েছে।বাবা গরীব হওয়ার কারণে পঞ্চম শেণি পাস করার পর মেয়েকে আর পড়াতে পারেননি।বাবা বেলায়েত হোসেনকে সংসার চালাতে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কারণ বড় তিন ছেলে বিয়ের পর আলাদা হয়ে গেছে।তারা এখন আর বাব-মায়ের দেখাভাল করেন না।আর এই জন্য বুড়া বয়সে বেলায়েত হোসেনকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে।জিনাত রেহানাও বসে নেই,নকশিকাঁথা শীতল পাটি এসব শিখে ফেলেছে।বাবা বেলায়েত হোসেন ও মা ছকিনা বেগম মেয়ের বিয়ে নিয়ে খুব দু:চিন্তায় আছেন।এই অভাব অনটনের সংসারে মেয়েকে কিভাবে বিয়ে দেবেন সেই চিন্তায় অস্থির।এমন সময় বেলায়েত হোসেনের দু:সম্পর্কের এক শ্যালক জিনাত রেহানার জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসল।তাকে দেখা মাত্রই বেলায়েত হোসেন বলল,
কামরু ভাই এই গরীবের বাড়িত কী মনে কইরা?
দুলাভাই রেহানার জন্য এক্কান ভালো সমন্ধ আইছে।
ছেলের নাম ঠিকানা কও আমি জাইনা আহি।
দুলাভাই তোমার কিছু জানতে অইব না,আমি সব জাইনা আইছি।তোমাগো ছাইয়া ছেলের টাকা পয়সা বহুত গুন বেশি।তই এক্কান কথা।
কামরু ভাই থামলা ক্যান কও কি কথা?
ছেলের নাকি ছোট্ট এক্কান বেরাম আছে।তাই তারা গরীব ঘরে পোলারে বিয়া দিবার ছাই।তোমার কিছু দেওন লাগবো না।সবকিছু ওরা দিবে।এখন তুমি যদি রাজী হও আমি তাগোরে পাকা কথা দিবার পারি।
কামরু ভাই পোলার রোগ যদি পরে ভারী অইয়া যাই?
না দুলাভাই তেমন কিছু অইব না।আমি সব জাইনা আইছি।কইলাম না ছোট্ট এক্কান বেরাম,কিছু অইব না।ছেলের মেলা টাকা পয়সা,রেহানা খুব সুখে থাকব।
বেলায়েত হোসেন আর তার স্ত্রী ছকিনা বেগম আর অমত করলো না।কারণ তাদের মতো সমান ঘরে মেয়ে বিয়ে দিতে গেলে অনেক টাকা খরচ হবে। মেয়ে জামাইকে অনেক কিছু দিতে হবে।আর এখানে মেয়ে বিয়ে দিলে তেমন কিছু দিতে হবে না।বরং অলঙ্কারাদি দিয়ে তারা মেয়েকে সাজিয়ে নিয়ে যাবে।এই সবদিক বিবেচনা করে তারা বিয়েতে মত দিলো।
সময়মতো বিয়ে হল।জিনাত রেহানা বউ সেজে স্বামীর বাড়িতে গেল।বউ দেখে সবাই খুশি।রোগা ছেলের জন্য এমন একটা টুকটুকে সুন্দরী বউ পাওয়া খুবই ভাগ্যের ব্যাপার।আত্নীয়-স্বজন সবাই সাপোর্ট করে বলে,
রকিব উদ্দীন রোগা অইলে কি অইবে, বউ পাইছে সুন্দর এক্কান।
রাত অনেক হলো।শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, আত্নীয়-স্বজন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।জিনাত রেহানা স্বামীর আগমনের অপেক্ষায় বসে আছে।এমন সময় স্বামী রকিব উদ্দীন আস্তে আস্তে বউয়ের পাশে এসে বসলো।বউকে কোন কিছু না বলে শুয়ে পড়লো।জিনাত রেহানাতো অবাক এমন একটা সুন্দরী বউ পেয়ে ও স্বামী তাকে ছুঁয়ে দেখল না।ব্যাপার কী,তবে কি সে সত্যি রোগা?তাহলে সে বিয়ে করলো কেনো?বিয়ের নামে একটা নারীর জীবন ধ্বংস করা এসবের মানে কী?গরীব হয়েছি বলে এমন একটা রোগা বোকা স্বামীর ঘর করব, হতে পারে না।মেয়েরা কি শুধু ভাত কাপড়ের জন্য বিয়ে করে,এসব ভাবতে ভাবতে সে ঘুমিয়ে পড়লো।মাঝরাতে উঠে গেল স্বামী রকিব উদ্দীনের শ্বাস কাশ ও হাঁপানি।স্বামীর ঘোঁ ঘোঁ শব্দ শুনে জিনাত রেহানা জেগে উঠল।কিন্তু একি স্বামী রকিব উদ্দীনের খুব শ্বাস কষ্ট হচ্ছে খুব সিরিয়াস মনে হয় মারা যাবে।সে চিৎকার করে বলে,
আম্মা তাড়াতাড়ি আহেন। আপনার ছেলে মনে অয় আর বাঁচব না।
মা জানে ছেলের কি সমস্যা। তাই বউকে বলে,
বউ চিন্তা কইরো না।এইড়া তেমন কিছু না।কিছুক্ষণ পর সাইরা যাইব।
ঠিক আধা ঘন্টা পরে রকিব স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে এলো।জিনাত রেহানা গুমরে গুমরে কেঁদে কেঁদে বলে,
হায় আল্লাহ আমি এ কি হুনতাছি,মা-বাবা টাকার লোভে আমারে একটা রোগা মানুষের লগে বিয়া দিলো?
রাত শেষ ভোর হল।জিনাত রেহানা জেগে উঠল।সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম শেষ করলো।শ্বশুর-শ্বাশুড়ি স্বামী ননদ সবাই খেয়ে দেয়ে আপন আপন কাজে মনোযোগ দিলো।জিনাত রেহানা সংসারের কাজকর্ম করছে ঠিকই কিন্তু মনে এক বিন্দু ও শান্তি নেই।দিন শেষে রাত হল পরদিন ও স্বামী রকিব উদ্দীনের একই অবস্থা।কথায় বলে না নারীদের বুক ফাটে তবুও মুখ ফোটে না।জিনাত রেহানা স্বামীর দূর্বলতাকে মুখ বুঝে সহ্য করে নীরবে সবকিছু হজম করে চলেছে।হুট করে কিছু বলতে গেলে সবাই বলবে নতুন বউয়ের লাজ শরম নেই।বিয়ে হতে না হতে স্বামীর নামে বদনাম রটিয়ে বেড়াচ্ছে।তাই জিনাত রেহানা চুপ।এর ফাঁকে কদিন কেটে গেল।জিনাত রেহানা বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসল।জিনাত রেহানার মন খারাপ দেখে মা বলল,
কিরে মা কী অইছ?,এমন মন খারাপ কইরা বইয়া রইলি ক্যান?শ্বশুর বাড়ির থেইক্যা আহনের পর থেকে দেখতাছি মন খারাপ কইরা বইয়া আছস।কী অইছে মা আমারে খুইল্যা কও?
জিনাত রেহানা আর থেমে থাকল না।গড়গড় করে বলতে শুরু করলো।
মা তোমরা জাইনা হুইনা আমারে একটা রোগা বেড়ার লগে বিয়া দিলা?আমি কি তোমাগো পর?
কি কস মা তুই পর অইতে যাইবি ক্যান।তুই তো আমাগো একমাত্র আপন মাইয়া।
তাহলে আমারে এই বেরাম্যা পোলার লগে বিয়া দিলা ক্যান?
কস কি মা তোর মামাতো কইলো ছোট্ট এক্কান বেরাম,অসুবিধা অইব না।
জিনাত রেহানা এবার ক্ষেপে উঠে বলে,
মা তাহলে তোমরা সব জাইনা এই বেরাম্যা পোলার লগে আমারে বিয়া দিলা?
মা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
কি করব মা আমাগো মতন গরীবের কপালে কী বালা কিছু আছে?তোর বাবার ঘরে আহনের পর থেইক্যা অভাব অনটনে দিন কাটতাছে।কত বেলা যে না খাইয়া থাকতে অইছে তার কোন হিসাব নাই।তাই ভাবলাম বেরাম্যা হলেও তাগো টাকা পয়সার কমতি নাই।মাইয়াডা সুখে থাকব আমার মতন ভাত কাপর কষ্ট করবো না।তাই রোগা জাইনা ওর লগে তোর বিয়া দিছি।
ছকিনা বেগমের চোখের পানি আর বাঁধ মানলো না।টপটপ করে গড়িয়ে পড়লো।জিনাত রেহানা ও থেমে নেই,চোখের পানি ঝরছে অনবরত।মা-মেয়ে দুজনের চোখের পানি যেন শুকাচ্ছে না।এদিকে স্বামী রকিব উদ্দীন তার বোন ভগ্নিপতিকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসল।একবেলা খাবে তারপর জিনাত রেহানাকে নিয়ে যাবে।বেলায়েত হোসেন ও তার স্ত্রী গরীব হলেও মেহমানের ঠিকমতো আপ্যায়ন করলেন।জিনাত রেহানা স্বামী রোগা জেনেও মা-বাবার আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে ফের স্বামী ননদের সঙ্গে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করলো।দিন যায় রাত হয়।প্রতি রাতে স্বামী রকিব উদ্দীনের একই অবস্থা বউকে ছুঁয়েও দেখে না।জিনাত রেহানার মতো একজন অবলা নারী আর কত সহ্য করবে।স্বামীর বিরহ আর কত সইবে।একদিন তার শ্বাশুড়িকে বলল,
আম্মা আপনাগোতো টাকা পয়সার কমতি নাই।আপনার পোলার চিকিৎসা করান না ক্যান?
এই সেরেছে একটা প্রতিবাদ পরিবারে অশান্তি বয়ে আনল।শ্বাশুড়ি তো রাগে বোম।কড়া ধমক দিয়ে চোখ দুটো লাল করে হাত উঠিয়ে বলে,
ছি: ছি: বউ বেহায়া বেশরমের লাহান এই সব কী কইতাছ?লোকে হুনলে কি কইব।আমার পোলা বালা তার কোন বেরাম নাই?শুধু শ্বাস-কাশ এইডা কোন বেরাম অইল?
আম্মা আপনারা মিছা কথা কইতাছেন।শ্বাস কাশ ছাড়া ও আপনার পোলার অনেক বেরাম আছে।তাই বউয়ের লগে কথা কয় না।এমন বেরাম্যা স্বামীর ঘর না কইরা মইরা যাওন ও বালা।আপনার পোলারে তারাতারি বালা করেন।নইলে আমি তার ঘর করুম না ছাপ ছাপ কইয়া দিলাম।
এই নিয়ে বউ শ্বাশুড়ি আর ও কিছু সময় তর্ক করে। তর্কাতর্কি এক সময় চরমে উঠে যায়।শ্বাশুড়ি বলে ছেলে ভালো বউ বদনাম রটাচ্ছে।আর বউ বলে স্বামী রোগা শ্বাশুড়ি মিথ্যে বলছে। যেমন শ্বাশুড়ি তেমন বউ।কেউ কারো দোষ স্বীকার করছে না।শ্বাশুড়ি ক্ষিপ্ত হয়ে শেষে জিনাত রেহানার বাবাকে জরুরী ভিত্তিতে আসার জন্য খবর পাঠায়।বেলায়েত হোসেন আর দেরী করলো না।শ্যালক কামরুকে নিয়ে জামাইর বাড়িতে উপস্থিত হলো।দুজন অন্ধর মহলে গিয়ে বসলো।তখনি বেয়াইন বলল,
বেয়াই আমার মান সম্মান বইলা আর কিছু থাকল না।
ক্যান কী অইছে,আমার মাইয়া কি কোন দোষ করছে?
শুধু দোষ কইলে ভুল অইব।আপনার মাইয়া যেসব বেহায়া বেলাজ কথা কইয়া বেড়াইতাছে তা হুনলে মাইনষে ছি: ছি: করবো।এইড়া কেমন মাইয়া জন্ম দিলেন লাজ শরম বইল্যা কিছু নাই।আমার মুখের উপর কয় আমার পোলার নাকি বেরাম আছে।তার লগে কথা কয় না।এসব মিছা কথা হুনলে কার মেজাজ ঠিক থাহে কন?
বেয়াইন রেহানা মাইয়া মানুষ, বুঝ জ্ঞান আর কত অইছে।আপনি এই নিয়া মন ধইরেন না।
মন ধরুম না মানে, আপনার মাইয়াত আমার মুখের উপর কইয়া দিলো,আমার বেরাম্যা পোলার ঘর করবো না।আচ্ছা আপনারাতো জাইনা হুইনা মাইয়া বিয়া দিছেন।এখন এসব কথা হুনলে সয়ন যা কন?
এবার কামরু বলল,
বেয়াইন এসব কিছু না।কয়দিন যাক সব ঠিক অইয়া যাইব।এহনি আমরা সব মিট কইরা দিয়া যামু।
জিনাত রেহানা আড়ালে থেকে সব শুনল।কিছু বলার ইচ্ছা থাকলেও বলতে পারলো না।কামরু তাকে ডেকে নিয়ে বলল,
রেহানা বিয়া অইতে না অইতে এসব কি হুনতাছি।লাজ শরমের মাথা খাইছস নাকি?শ্বাশুড়ির লগে উঁচু গলায় কথা কইতে নাই।উনার পাও ধইরা মাফ চাও।
অনিচ্ছা সত্বেও রেহানা শ্বাশুড়ির পা ধরে মাফ চাইল।বউ শ্বাশুড়িকে মিট করে দিয়ে বেলায়েত হোসেন মেয়ের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হল।তখনি জিনাত রেহানা কেঁদে কেঁদে বলল,
বাবা আমারে নিয়া যাও।আমি আর এ বাড়িতে থাকুম না।
ছি: মা এসব কথা কইতে নাই।স্বামীর ঘর অইল গিয়া স্বামীর আপন ঠিকানা।রকিবের একটু শ্বাস কাশ তা এমন কী অইব।টাকা পয়সা কোনদিকে কমতি আছে।তুই এই দিকটা মাইনা নিলে সব ঠিক অইয়া যাইব।সবর মান, তুই অনেক সুখে থাকবি।
এবার জিনাত রেহানা গুমরে গুমরে কেঁদে কেঁদে বলে,
বাবা তোমরা শুধু টাকার দিক দেখলা।কেউ আমার মন বুঝবার চাইলা না।ঠিক আছে যাওগা।আমি আর কিছু কমু না।ঠিক গলায় দড়ি দিয়া মরুম।
বেলায়েত হোসেন বাড়ি ফিরে আসল।মা ছকিনা বেগম এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো,
ওগো রেহানা ক্যান আছে?
বালা আছে।তই তোমার মাইয়া যা করতাছে,লোকে হুনলে শরমে মুখ দেহান যাইব না।
আপনে এই সব কী কইতাছেন?রেহানা এমন কি করছে যে লোকের কাছে মুখ দেখান যাইব না?
বেলায়েত হোসেন রেগে উঠে বলে,
কী করছে হুনবার চাও।
হু চাই আপনে কন?
বেলায়েত হোসেন আর দেরী করলো না।রেহানার শ্বশুর বাড়িতে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা প্রকাশ করলো।তারপর বলল,
আমি আর পারুম না।তোমার মাইয়ারে তুমি সামলাও।
বেলায়েত হোসেন কথাগুলো বলে হনহন করে ক্ষেত নিড়ানি দিতে গেল। ছকিনা বেগম মেয়ের চিন্তায় অস্থির। কি করবে না করবে ভেবে পাচ্ছে না।মাথায় হাত দিয়ে ঘরের বারান্দায় বসে আছে।ঠিক তখনি সেখানে উপস্থিত হল পাশের বাড়ির মাস্টারের মেয়ে লাকি।সে বি এ পড়ে।তার সঙ্গে রেহানার ভাবসাব ভালো ছিল।তাই রেহানাকে দেখতে এসে ছকিনা বেগমকে এভাবে ভাবতে দেখে বলল,
চাচী বসে বসে কী ভাবছেন? রেহানা কবে আসবে?
কিছু নারে মা,রেহানা কয় দিন পর আইব।
চাচী একটা কথা বলতে চাই।যদি কিছু মনে না করেন?
হু মা কও কি কইবা।
লাকী আর দেরী করলো না বলল,
চাচী শুনলাম রেহানার স্বামী রোগা।বউয়ের সঙ্গে কথা বলে না।কিছু বললে রেহানাকে মারতে চাই।কথাগুলো কী সত্যি চাচী?
রেহানার মা দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে উত্তর দিলো,
মারে তুমি যা হুনছস সবই সত্য।তই আমাগো মতন গরীবের কী বা করার আছে।মাইয়াডারে এই ঘর থেকে লইয়া আইলে আবার কী বিয়া দিবার পারুম?হেই ক্ষেমতা কী আমাগো আছে?
চাচী এটা কোন কথা হলো।বিয়ে দিতে পারবেন না বলে রেহানা একটা নির্বোধ পুরুষের ঘর করবে।যে কিনা বউকে ভালোবাসতে জানে না।মেয়েরা কি শুধু ভাত কাপড়ের জন্য বিয়ে করে?স্বামীর ভালোবাসা পেতে হবে না?রেহানা জল জ্যান্ত একটা মানুষ তার ভিতরে আবেগ অনুভুতি সবই আছে।সে কিভাবে তার আবেগকে সংবরণ করবে স্বামীর ভালোবাসা ছাড়া?এটা সম্পুর্ণ অসম্ভব।এখনো সময় আছে তাকে নিয়ে আসেন।তানা হলে সে আপনাদের উপর অভিমান করে একটা অঘটন ঘটাবে।কারণ এখন তার মন মেজাজ ভালো না।শুধু তাই নয় জ্ঞানী লোকেরা বলে থাকেন ইয়ং ছেলে-মেয়েদের মেজাজ তাকে সব সময় গরম।তাদের কে ছোট খাটো কিংবা জটিল বিষয় নিয়ে কখনো উত্তেজিত করা ঠিক নয়।যা করার ধীরে সুস্থে করতে হবে।তবে সমস্যার সমাধান হবে। এর ব্যতিরেকে নয়।তাই বলছি আর দেরী না করে রেহানাকে নিয়ে আসুন।
ছকিনা বেগম আর দেরী করলো না।স্বামীকে নিয়ে ছুটে আসল জিনাত রেহানার শ্বশুর বাড়িতে।এসে এ কী দেখল, লোকজনের প্রচণ্ড ভিড়,কোন রকমে ঠেলাঠেলি করে তারা ভিতরে ঢুকল।ঢুকে এ কি দেখল রেহানা গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছে।মা-বাবা দুজনে চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে বলে,
মা তুই একি করলি আমাগো উপর রাগ কইরা “গলায় দড়ি” দিয়ে এভাবে মইরা গেলি।কাঁদতে কাঁদতে মা-বাবা দুজন অজ্ঞান হয়ে পড়লো।পুলিশ এসে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হল।লাশ পোস্ট মর্টেম করতে নিয়ে যেতে চাইলে সবাই মিলে তা ম্যানেজ করে জিনাত রেহানাকে ছহি ছালামতে দাফন করলো।
ঃসমাপ্তঃ


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

গল্প চেয়ারম্যানের মেয়ে আফছানা খানম অথৈ

চেয়ারম্যানের মেয়ে আফছানা খানম অথৈ মেহেরপুর একটি সুন্দর গ্রাম।এই গ্রামে কিছু অদ্ভুত নিয়মকানুন চালু আছে,যা অন্যকোন গ্রামে নেই।এই গ্রামে নারীরা

গল্প মেয়েরা ও মানুষ আফছানা খানম অথৈ

গল্প মেয়েরা ও মানুষ আফছানা খানম অথৈ রানু বউ হয়ে এসেছে চার পাঁচ মাস হলো।এরই মধ্যে তার স্বামী স্কলারশিপ এর

গল্প মেয়ে সাক্ষী আফছানা খানম অথৈ

মেয়ে সাক্ষী আফছানা খানম অথৈ আবিদ হায়দার বেড়াতে এসেছে গ্রামে তার বন্ধু ফুয়াদ'র বাসায়।অবশ্য সে একা না,তার সঙ্গে আছে,বন্ধু সজল

গল্প বন্ধ্যা আফছানা খানম অথৈ

গল্প বন্ধ্যা আফছানা খানম অথৈ আলেয়া বউ হয়ে এসেছে চার বছর হলো।এখনো মা হতে পারেনি। এজন্য রীতিমতো তাকে কটু কথা

2 Replies to “গল্প গলায় দড়ি আফছানা খানম অথৈ”

Leave a Reply