যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয়

যা ইসলামী শরিয়ত এর উৎস নয়

0

শরিয়ত হচ্ছে ইসমামী জীবনযাপনের আইনকানুন। প্রতিটি মুসলিমকে ইসলামী শরিয়তের আলোকেই জীবন পরিচালিত করতে হয়। শরিয়তের বাইরে কোনো কিছুই ইসলামে গ্রহনযোগ্য নয়। কেননা ইসলামী শরিয়তের মূল উৎস চারটি। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে শরিয়তের বাইরে এমন কিছুর অনুসরণ করে যা ইসলামী শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমরা জানি  আজ আমরা জানার চেষ্টা করব কোন কোন উৎস গুলো শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত নয়। বা কোন কোন বিষয় গুলো শরিয়তের মানদন্ড নয়।

স্বপ্ন

মুসলিম দাবিদার সুফি সুন্নিরা নতুন নতুন ইবাদতের উৎস হিসাবে স্বপ্নকে দলিল দেয়। অর্থাৎ তারা ইসলামের নামে এমন এমন সব ঈমান আমল আকিদা পালন করে যা   কোনো বুযু্র্গ, কামেল বা আবেদি ব্যক্তির স্বপ্নের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এবং এইসব ভিত্তিহীন নতুন নতুন ইবাদত বা আমল কখনোই প্রকৃত ইসলাম সমর্থন করে না।

কেননা ইসলামে শুধুমাত্র নবি রাসুলদের (আ:) স্বপ্নের মূল্য রয়েছে। তা এই কারণে যে, তাঁদের স্বপ্ন সত্য এবং তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। আর এই স্বপ্ন দ্বারাই আল্লাহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। যেমন: হজরত ইবরাহিম (আ.) তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার বিষয়টি স্বপ্নযোগে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন। এবং এই স্বপ্ন দেখেই হযরত ইব্রাহিম (আ.) কুরবানির বিষয়টি অনুধাবন করেছেন। এ বিষয়ে ইবরাহিম (আ.)-এর কথা পবিত্র কোরআনে এভাবে এসেছে :

যা ইসলামী শরিয়তের মানদন্ড নয় শরিয়ত কাকে বলে শরিয়তের উৎস শরিয়তের মানদণ্ড শরীয়ত মানে কি শরিয়ত মানে কি দ্বীন ও শরীয়ত শরীয়ত ও মারফত কি শরিয়ত ও মারফত শরিয়ত ও মারিফত কি শরিয়ত ও মারফত কি

নবি রাসুলদের স্বপ্ন ছাড়া বাকি মুসলিম মুমিনের জন্য স্বপ্নের বিষয়টি হচ্ছে সুসংবাদ এবং দু:সংবাদের একটি ইশারা। যেকারণে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

যা ইসলামী শরিয়তের মানদন্ড নয় শরিয়ত কাকে বলে শরিয়তের উৎস শরিয়তের মানদণ্ড শরীয়ত মানে কি শরিয়ত মানে কি দ্বীন ও শরীয়ত শরীয়ত ও মারফত কি শরিয়ত ও মারফত শরিয়ত ও মারিফত কি শরিয়ত ও মারফত কি

আবার অন্যদিকে কোনো মুমিন রাসুল (সা.)-কে স্বপ্নে দেখার বিষয়টি ভিন্ন। কেননা হাদিসে এসেছে,

যা ইসলামী শরিয়তের মানদন্ড নয় শরিয়ত কাকে বলে শরিয়তের উৎস শরিয়তের মানদণ্ড শরীয়ত মানে কি শরিয়ত মানে কি দ্বীন ও শরীয়ত শরীয়ত ও মারফত কি শরিয়ত ও মারফত শরিয়ত ও মারিফত কি শরিয়ত ও মারফত কি

সুতরাং হাদিস দ্বারা এটা সুস্পষ্ট যে, স্বপ্ন কখনোই ইসলামের দলিল নয়। কেননা এতে শয়তানের প্ররোচনা থাকে। স্বপ্ন নিয়ে স্পষ্ট হাদিস থাকার পরও মুসলিম দাবিদার সুফি সুন্নিরা স্বপ্নকে অনুমান করে তাদের বিভিন্ন আমলের দলিল হিসাবে পেশ করে। অথচ আল্লাহ বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 10

সুতরাং স্বপ্ন অনুমান ভিত্তিক কল্পনা ছাড়া কিছুই নয়। যার অনুসরণ করা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন। যারা কোনো দলিল ছাড়াই শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে আল্লাহ তাদেরকে লা’নত/অভিসাপ দিচ্ছেন এই ভাবে-

“(আল্লাহ বলেন) অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক, যারা উদাসীন, গোমরা/ভ্রান্ত”। (সুরা জারিয়াত আয়াত : ১১)

কাশফ

উপমহাদেশেদ সুফি সুন্নিরা মনে করে, মানুষের আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে তার হৃদয়ের পর্দা উঠে যায় এবং তার সামনে সৃষ্টি জগতের সকল রহস্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। তার অন্তরআত্মা খুলে যায়। এই অন্তর আত্মা খুলে গেলেই তারা আধ্যাত্মিক মানুষ বনে যান। আর এই অন্তর আত্মা খুলে যাওয়া কে তাদের পরিভাষায় কাশফ বলা হয়।

এই কাশফ বিশেষকরে তাদের পীর অলি আউলিয়াদের হয়ে থাকে। যখন তাদের কাশফ হাসিল হয়ে যায় তখন আল্লাহ এবং তাদের মাঝে কোন অন্তরায় থাকে না। তখন তারা জান্নাত, জাহান্নাম, সাত আসমান, জমিন আল্লাহর আরশ, লাওহে মাহফুজ পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারেন। আর এভাবেই পরিভ্রমন করে তারা গায়েবের সকল খবর, মানুষের অন্তরের অবস্থা এবং সাত আসমানে, জমিনে যা আছে তার সবই জানতে পারেন। কিন্তু ইসলামে এইসবের কোনো স্থান নেই।

ইসলামে কাশফের অবস্থান

কাশফ অর্থ প্রকাশিত হওয়া বা অজানা কোন বিষয় নিজের কাছে প্রকাশিত হওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ কর্তৃক তার কোন বান্দার নিকট তার অজানা এমন কিছুর জ্ঞান প্রকাশ করা যা অন্যের নিকট অপ্রকাশিত। আর তাই কাশফ কখনোই কারো ইচ্ছাধীন কোনো বিষয় নয় যে, তা অর্জন করা শরিয়তের দৃষ্টিতে কাম্য হবে  বা সওয়াবের কাজ হবে। তবে এটা অহি হলে তা কেবলমাত্র নবি-রাসুলগণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন আল্লাহ বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 9

তবে কখনও কখনও এমনও আশ্চর্য ও রীতি বহির্ভূতভাবে অন্য কারো নিকট থেকে অলৈাকিক কিছু অবশ্যই ঘটতে পারে বা প্রকাশিত হতে পারে। যেমন সাহাবি ও তাবেঈগণ থেকে এমন অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে। তবে এটা এমন একটি বিষয় যা,  কোনো নবিরও ইচ্ছাধীন নয়। এমনকি এই কাশফ আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও ইচ্ছাধীন ছিল না। যেমন, হযরত ইমাম বুখারী তাঁর সহিহ বুখারীর, ছয় নং খন্ডে, ৬০তম অধ্যায়ে, ৪৩৪ নং হাদিসে এর একটি ঘটনা এসেছে। যা তিনি তার গ্রন্থের “তাফসির” অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন এভাবে, আয়িশা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 8

আল্লাহ বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 7

এখানে এটা সুস্পষ্ট যে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীগণ তার অবর্তমানে তাঁর থেকে গোপনে তার বিরুদ্ধে আলাপ করল অথচ তিনি কিছুই জানলেন না। তার কাশফ যদি ইচ্ছাধীন হতো, তাহলে  তিনি সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত কিছু জানতে পারতেন।

এই ঘটনা ছাড়াও আরেকটি ঘটনা রয়েছে। যেখানে কোন এক সফরে ‘আয়িশা (রা:) এর একটি হার হারিয়ে গিয়েছিল। আর হার হারিয়ে যাওয়ার কারণে সাহাবিদের পথে আটকিয়ে রেখে হার খোঁজাখুঁজি শুরু হল। এমনকি হার না পাওয়াতে রাসুলুল্লাহ (সা.) চিন্তিতও হলেন। অথচ সত্য হলো যে,  রাসুলুল্লাহ (সা.) যে উটে তিনি ছিলেন, হার খানা তার নীচেই পরে ছিল। যদি এখানে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাশফ ইচ্ছাধীন হতো তাহলে তিনি এই ক্ষমতা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হার খানা পেয়ে যেতেন।

আরেকটি ঘটনা হলো হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম এর ঘটনা। তাঁর প্রিয় সন্তান হযরত ইউসুফ (আ.) যখন হারিয়ে গিয়েছিলেন। তখন তিনি দীর্ঘদিন পর্যন্ত ছেলে ইউসুফ আলাইহিস সালামে খবর না পাওয়ার কারণে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। অথচ তাঁর সন্তান তখনও জীবিত ছিলেন। যদি কাশফ ইচ্ছেধীন কোন কিছু হতো, তাহলে ইয়াকুব আলাইহিস সালাম কাশফের মাধ্যমে নিশ্চয়ই তাঁর সন্তানের জীবিত থাকার বিষয়টি জানতে পারতেন

শুধু তাইনয় কাশফ হওয়ার জন্য বুযুর্গ হওয়া পীর, অলি, আউলিয়া হওয়া শর্ত নয়। বুযুর্গ তো দূরের কথা, মুমিন হওয়াও শর্ত নয়। কাশফ তো এমন জিনিস তা অমুসলিমদের ও হতে পারে। এই ধরনের বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা অন্যান্য ধর্মীয় অনুসারীদেরও ঘটছে।

অতএব এরূপ যদি কোন ঘটনা কোনো মুমিন থেকে হয়, তবে সেটা হবে ‘কারামত’। অর্থাৎ আল্লাহ্ তাকে এর দ্বারা সম্মানিত করেন। আর যদি কাফির থেকে ঘটে, তবে সেটা হবে ফিৎনা। অর্থাৎ আল্লাহ এর দ্বারা তার পরীক্ষা নিচ্ছেন যে, সে এর মাধ্যমে তার কুফুরি বৃদ্ধি করবে, না হয় তওবা করে সঠিক দ্বীনের পথে ফিরে আসবে।

অতএব কাশফ দ্বারা কোনো বুযু্র্গ বা আবেদি বান্দা কোনো কিছু বললেই তা ইসলামের শরিয়ত বা ইবাদতের অংশ হবেনা। কেননা এটা কখনোই কারো নিজস্ব ক্ষমতা নয়। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ চাইলেই কোনো কোনো তাঁর মুমিন বান্দাকে কাশফের দ্বারা কিছু কারামত প্রকাশ করেন। কিন্তু তার মানে এই নয় এই  কাশফ দ্বারা প্রাপ্ত সংবাদ ইসলামের কোনো ইবাদত বা আমলের মানদন্ড হতে পারে। কেননা ইসলামী শরিয়তে এর কোনো অবস্থান নেই। যা সুফি সুন্নিরা দলিল ধরে বসে আছে।

অথচ এই কাশফকে দলিল ধরে সুফি সুন্নিরা ইসলামের নামে বিভিন্ন নতুন নতুন বিভ্রন্তিকর ইবাদত এবং আমলের প্রচলন শুরু করেছে।  যা কখনোই ইসলাম সম্মত নয়।

ইলহাম

ইলহামের পারিভাষিক অর্থ হল, চিন্তা ও চেষ্টা ছাড়াই কোনো কথা অন্তরে উদ্রেক হওয়া। ইলহাম কাশফেরই প্রকার বিশেষ। আর এই ইলহামও স্বপ্নের ন্যায় কখনো আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আবার কখনো শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। হাদিসে এসেছে,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 6

এ হাদিস থেকে এটা স্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান  যে, ইলহাম কখনো আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়, আবার কখনো শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। সুতরাং ইলহাম কখনোই হক ও বাতিলের মাপকাঠি হতে পারে না এবং শরিয়তের কোনো দলিল হতে পারে না।

এছাড়াও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কারো নিকট ইলহাম হওয়ার ব্যাপারে শুধু এতটুকু বলা হয়েছে যে, তা হক ও ভাল। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই ইলহামকে শরিয়তের মানদন্ড বলা হয়নি। অর্থাৎ ইলহাম থেকে প্রাপ্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশ কখনোই শরিয়তের অংশ হবে না। বা এই ইলহাম থেকে প্রাপ্ত আদেশ নির্দেশ কখনোই কোনো ইবাদত আমল আকিদা ইত্যাদি হতে পারে না।

অথচ আমাদের মুসলমানদের অধিকাংশ সুন্নিরা তাদের বুযু্র্গের ইলহামকে শরিয়তের দলিল বা মাপকাঠি মনে করে। যা কখনোই প্রকৃত ইসলাম দ্বারা স্বীকৃত নয়। যেসব সুফিবাদীরা  বুযু্র্গদের ইলহামকে দলিল ধরে বিভিন্ন নতুন নতুন আমল চালু করেছে তারা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত। আজ এই উপমহাদেশে শতশত আমলের চর্চা হচ্ছে যার দলিল হচ্ছে বিভিন্ন বুযুর্গ ব্যক্তিদের কাশফ এবং ইলহাম। যা সুস্পষ্ট শিরকের পথে পরিচালিত।

ব্যক্তি বিশেষের অনুসরণ

পৃথিবীতে মুসলমানরা শুধু একজনকেই অনুসরণ করতে পারে। আর তিনি হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ সাঃ। তিনি ব্যতীত পৃথিবীর আর কাউকে অনুসরণ করুন ঈমানের অংশ নয়। তাই রাসুলের সাঃ আদর্শের অনুসরণ এবং অনুকরণই হচ্ছে ইসলাম। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশের সুফি সুন্নিরা পীর অলি আউলিয়াদের অন্ধ অনুসরণ করে।

ইসলামে জ্ঞানী বিদ্যান লোকের অনুসরণ নিষিদ্ধ নয়। তবে সেই অনুসরণের পথ হতে হবে রাসুলের আদর্শে। রাসুলের সুন্নাহ ও আদর্শ ছাড়া কারো অন্ধ অনুসরণ ইসলাম স্বীকৃতি দেয় না। অথচ যারা পীর মুরিদী মেনে “ফানা ফিস শায়খের” নামে পীরের যেকোনো আদেশকে (হোক সেটা শরিয়ত বিরোধী) ইসলামের আদেশ মনে করে। তারা কখনোই প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না।

অথচ তারা ফানা ফিস শাইখ পালনের মাধ্যমে পীর তার মুরিদ কে যে আদেশ নিষেধ দিচ্ছেন তা তারা কুরআন সুন্নাহর বাইরে হলেও বিনা বাক্যে মেনে নিচ্ছে। এমনকি তাদের পীর প্রকাশ্যে শরিয়ত বিরোধী হুকুম দিলেও তা বিনা আপত্তিতে মেনে নেওয়াই হচ্ছে মুরিদের কাজ। যারা পীরের মুরিদ তারা কখনোই পীরের আদেশের বাইরে যেতে পারবে না। এমনকি হজ্জ্ব করতে যাওয়ার আগেও পীরের অনুমতি লাগবে।

শুধু তাইনয় পীর কী আদেশ নিষেধ দিচ্ছে তা যাচাইয়ের কিংবা তা ঐ কাজ জায়েয নাকি নাজায়েয সেই খোঁজ খবরও মুরিদরা নেওয়ার ইখতিয়ার নেই। যেমন: আমাদের দেশে সবচেয়ে হক্কানি পীরের দাবিদার চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মোহাম্মাদ এছহাক বলেন:

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 5

সুন্নিদের মতে তাদের পীরেরাও শরিয়তের মানদন্ড বা দলিল। অথচ কুরআন সুন্নাহ দ্বারা সুস্পষ্ট প্রমাণিত যে, কুরআন এবং সুন্নাহর স্পষ্ট দলিল ছাড়া  কারো অন্ধ অনুসরণ হচ্ছে নিশ্চিত গোমরাহী। আল্লাহ বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 4

এখানে আল্লাহকে বাদ দিয়ে বলতে, যারা আল্লাহ এবং রাসুলের সুন্নাহর বিপরীতে আদেশ দিবে তাদের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং কুরআন সুন্নাহর বাইরে গিয়ে  কোনো পীরও শরিয়তের দলিল হতে পারে না।

কোনো বিশেষ বংশধারা

কোনো বিশেষ বংশধারা বা খানদানকে সত্যের মাপকাঠি মনে করা ইসলামী শরিয়তের মূলনীতি বিরোধী। কোনো বংশধারা যদি হকের মাপকাঠি হতো তবে নবি (সা.)-এর খানদানকেই বংশপরস্পরায় আজীবনের হকের মাপকাঠি হিসেবে ঘোষণা করা হতো। কিন্তু কোরআন-সুন্নায় তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। তিনি নিজেও তা কখনো ঘোষণা করেননি। বরং বলেছেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 3

অথচ আমাদের উপমহাদেশে পীরের ছেলেকে পীর বানিয়ে আল্লাহর অলি ঘোষণা করা হয়। ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে পীরের ছেলের চাইতেও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি পীর হওয়ার দাবি রাখেন। কিন্তু বংশানুক্রমিক না হাওয়ায় তাদের পীর হিসাবে নিযুক্ত করা হয় না। এখানে শুধুমাত্র একক পীরের বংশকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। অর্থাৎ বংশকেই শরিয়তের দলিল সাব্যস্ত করা হয়। যা ইসলামে স্বীকৃত নয়।

অধিকাংশ মানুষের মতামত

ইসলামে অধিকাংশ মানুষের মতামতকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ কুরআন হাদিসের সহীহ দলিলের বিপরীতে কখনোই অধিকাংশ মানুষের মতামতকে আল্লাহ মেনে নিবেন না।  আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 2

এই আয়াত দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত যে অধিকাংশ লোক কখনোই হক বা সত্যের মাপকাঠি হতে পারে না। এবং সে কারণেই তাদের অনুসরণও করা যাবে না। অথচ উপমহাদেশে সুফি সুন্নিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখে যেকোনো কেউ বলতে পারে যে, এরাই মনে হয় সঠিক পথে আছে। কিন্তু পবিত্র কুরআন বলছে কম সংখ্যক লোকই সঠিক পথে থাকবে। যেমন: আল্লাহ বলেন,

যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় 1

উপরোক্ত আয়াত দ্বারা প্রমাণিত অল্পসংখ্যক লোকই কিয়ামত পর্যন্ত ইমান আনবে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। সেইসাথে অধিকাংশ লোক ইমান আনলেও তারা মুশরিক। সুতরাং কুরআন হাদিসের বিপরীতে অধিকাংশ লোকের অনুসরণ বা তাদের অনুকরণ কিংবা তাদের মতো চলা যাবে না।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামের মূল চারটি উৎস ছাড়া শরিয়তের আর কোনো উৎস নেই। উপমহাদেশের অধিকাংশ মুসলমান যারা সুফিবাদে বিশ্বাসী তারা সঠিক ইসলামের বাইরেও সুফীবাদের নামে (যা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত নামধারী)  নতুন নতুন ইবাদত ও আমল করে। যা কখনোই রাসুলুল্লাহ (সা.) কতৃক স্বীকৃত নয়। সুতরাং তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতায়  নিমজ্জিত।

আপনি আরো যা পড়তে পারেন


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

Author: সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলাম লিখেছেন। প্রবাসের সেই চাকচিক্যের মায়া ত্যাগ করে মানুষের ভালোবাসার টানে দেশে এখন স্থায়ী বসবাস। বর্তমানে বেসরকারি চাকুরিজীবী। তাঁর ভালোলাগে বই পড়তে এবং পরিবারকে সময় দিতে।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

Leave a Reply